সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া-আউরা খালে লোহার পিলারের ওপর নির্মিত কাঠের ছাউনির সেতুটি যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
সেতুর লোহার তৈরি পিলারগুলো বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে বেশি লোক উঠলেই কাঁপতে থাকে। এতে যে কোনো মুহূর্তে সেতু ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
এ অবস্থায় প্রতিদিন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অর্ধলক্ষাধিক মানুষের সামনে সেতুটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
১৯৬৬ সালে কাঁঠালিয়া-আউরা-কৈখালী ভারানী খালে লোহার পিলারের ওপর কাঠের ছাউনির সেতুটি নির্মিত হয়। স্বাধীনতার পর সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায় জেলা পরিষদ। তিন-চারবার মেরামত করা হলেও তা কাজে আসেনি।
সেতুর পূর্ব পাড়ে রয়েছে উপজেলা পরিষদ, উপজেলার প্রধান শহর, কাঁঠালিয়া সদর ইউপি, থানা, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, টিঅ্যান্ডটি, কাঁঠালিয়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পশ্চিম পাড়ে বাইপাস মোড়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী আউরা নতুন বাজার, আউরা জয়খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফায়ার সার্ভিস অফিসসহ বটতলা বাজার ও আমুয়া বন্দর।
নড়বড়ে সেতুটি দিয়ে শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে থাকে। এ সেতুর নিচ দিয়ে কার্গো জাহাজ, ফিশিং ট্রলারসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযান চলাচল করে। এ কারণে নড়বড়ে সেতুটি ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
বন্দরের সিমেন্ট ব্যবসায়ী মো. নুরনবী তালুকদার বলেন, লোহার পিলারের ওপর কাঠের ছাউনি দিয়ে সেতুটি নির্মিত হয়। কাঠ নষ্ট হয়ে গেলে জেলা পরিষদের অর্থায়নে সিমেন্টের স্লাব বসানো হয়। ২০১৭ সালে একটি বালুবাহী কার্গোর ধাক্কায় সেতুর মাঝখানের পিলার বাঁকা হয়ে যায়। পরে বাঁশ দিয়ে কোনো রকম চলাচল করছে মানুষ।
কাঁঠালিয়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান আকন বলেন, সেতুটির যা অবস্থা তাতে ছেলেমেয়েরা পার হতে ভয় পায়। বেশি লোক উঠলেই দুলতে থাকে সেতুটি। তাই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দ্রুত মেরামত বা নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম কবির সিকদার বলেন, এক সময়ের খরস্রোতা সেতুটি কাঁঠালিয়া-আমুয়া-পাটিখালঘাটা ও চেঁচরী রামপুর ইউপির মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ। বর্তমানে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে বহুবার জেলা পরিষদকে জানালেও কাজ হয়নি।
এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী বিপুল কুমার অধিকারী বলেন, দুই পাড়ে আমাদের সড়ক। সেতুটি জেলা পরিষদের হওয়ায় এখানে কোনো বরাদ্দ দেয়া যাচ্ছে না। এডিবি প্রকল্প ছাড়া এটি মেরামতের কোনো সুযোগ নেই।
কাঁঠালিয়ার ইউএনও সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে সেতু মেরামতের জন্য জেলা পরিষদে চিঠি দেয়া হলেও তারা কোনো জবাব না দেয়ায় কাজ করা যাচ্ছে না। তারাও কাজটি করছে না।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির বলেন, সেতুর যা অবস্থা, তাতে নতুন করে আরসিসি পিলার দিয়ে মেরামত না করলে কোনো লাভ হবে না। তাই বড় কোনো বরাদ্দ আনার চেষ্টা করছি। সম্প্রতি স্পেনের সহায়তায় ভাসমান সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রতিনিধি দল ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি পরিদর্শন করেছেন।
Leave a Reply